• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

কুড়ানো শালপাতাই যাদের জীবিকার মাধ্যম 

প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৪  

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলে যায় প্রকৃতি। প্রকৃতির এই পরিবর্তন অনেকের জন্য সুখময় হয় ভিন্ন কারণে। কিন্তু হতদরিদ্র মানুুষের কাছে আর্শীবাদ হয়ে আসে ঋতু পরিবর্তনে সময় ঝড়ে পড়া বিভিন্ন গাছগাছালরি পাতা। যা বর্ষাকালে হতদরিদ্র মানুষগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে। বিক্রি করেও আয় হয় কিছু অর্থ।

শালবনের শুকনো পাতা কুড়িয়েও জীবিকা নির্বাহ করছে অনেকে। প্রতি বছর ফাল্গুন থেকে বৈশাখ মাস দিনাজপুরের কয়েকটি শালবনের গাছগুলোর ঝড়া পাতা কুড়িয়ে তা বাজারজাত করে শত শত মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। ওইসব নারী-পুরুষ এই শালপাতা কুড়িয়েই অনেকের ভাগ্যের চাকাও ঘুরিয়েছে। যে যত বেশি সংগ্রহ করতে পারে তার আয় তত বেশি হয়। আবার অনেকে এই পাতা সংগ্রহ করে তা বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসের দিকে বাজারজাত করে এখনকার বাজার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি করে বেশী লাভের আশায়।

দিনাজপুরের বিরলের ধর্মপুর, নবাবগঞ্জ, বীরগঞ্জ, বিরামপুরসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে শালবাগান। যেখানে বনের আশেপাশের অনেক মানুষের এই শালবাগানের কুড়ানো শালপাতাই জীবিকার মাধ্যম। বিভিন্ন শালবনে শুকনো পাতা কুড়িয়ে শত শত মানুষ ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছে এই শালপাতায়। 
জানা যায়, বিরলে কালিয়াগঞ্জের ধর্মপুর ও রাণীপুকুর ইউপি’র ধর্মপুর, নলপুর, এনায়েতপুর, মহেশ শীবপুর, ছোট চৌপুকুরিয়া, বাঁমনগাঁও, বিশ্বনাথপুর, রাণীপুর, কামদেবপুর, ধর্মজইনসহ আশপাশের গ্রামগুলোয় বিশাল এই শালবনের বিস্তৃতি। বীরগঞ্জের ভোগনগর ইউপির ৮৫৫.৫০ একর ভূমির উপর অবস্থিত বনে চোখে পড়বে প্রাচীন পত্রঝরা সিংড়ার বনাঞ্চল শালবন। 

বসন্তের আগমনের শুরু থেকে ধর্মপুর, সিংড়াসহ বিভিন্ন শালবনের শাল, সেগুন, আকাশমনি গাছসহ অন্যান্য গাছের শুকনো পাতা ব্যাপক ঝড়ে পড়তে শুরু করে। আর এই শুকনো পাতা সংগ্রহ করে নিজেদের দৈনন্দিন রান্নার কাজসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করে জীবিকা নির্বাহ করে ওই এলাকার হৈমন্তি, জীবীত, অরুন, রাজেন, জাকারিয়া, এনামুল, মজেন, শান্তিবালা, রূপবানীসহ নাম না জানা অনেকে।

কয়েকজন শালপাতা সংগ্রহকারীরা জানায়, প্রতিদিন একজন ১০ থেকে ১৫ বস্তা পাতা সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি বস্তা পাতা এলাকায় ৪০ টাকা হারে বিক্রি হয়। এতে প্রতিদিন ৪০০ থেকে প্রায় ৬০০ টাকা আয় করা সম্ভব হয়। আর যাদের ভ্যানগাড়ি কিংবা অন্য কোন বাহন আছে, তারা এই পাতার বস্তাগুলো নিয়ে শহরে গিয়ে প্রতি বস্তা ৬০ টাকা দরে বিক্রি করেন। তাদের ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি আয় হয়। তবে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে বৃষ্টি’র শুরুর পর বিক্রি করলে দাম আরও বেশি পাওয়া যায় এবং তখন শুকনো পাতার চাহিদাও বেশী থাকে। তবে এসব শুকনো পাতার কোন হাট-বাজার গড়ে উঠেনি। একজন আরেকজন পরিচিতর মাধ্যমে এই পাতা সংগ্রহ ও বাজারজাত করে আসছেন তারা।  

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –